দক্ষিণের প্রবেশদ্বার: মাদারীপুর (জেলা পরিচিতি, বিখ্যাত স্থান ও ব্যক্তিবর্গ)

সরকারি কিংবা বেসরকারি চাকুরির পরিক্ষায় ভাইবা পরিক্ষায় জেলা সম্পর্কে প্রশ্ন করে থাকে। আজকের এই আর্টিকেলে মাদারীপুর জেলার বিস্তারিত জানব।


দক্ষিণের প্রবেশদ্বার মাদারীপুর


মাদারীপুর আয়তনে বাংলাদেশের ৫৫তম জেলা। ঢাকা বিভাগের মধ্যে ১০তম জেলা। জনসংখ্যার বিভিত্তে দেশের ৫১তম জেলা এবং ঢাকা বিভাগের মধ্যে ১২ তম। সাক্ষরতায় দেশের ২৪তম জেলা। 

পটভূমি

প্রাচীনকালে মাদারীপুরের নাম ছিল ইদিলপুর।  ইদিলপুর চন্দ্রদ্বীপ রাজ্যের একটি উন্নত জনপদ ছিল। তখন এ অঞ্চলের প্রশাসনিক নাম ছিল নাব্যমন্ডল। খ্রিষ্টীয় চতুর্থ শতকে ইদিলপুর ও কোটালীপাড়া ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য বিখ্যাত ছিল। সেন রাজাদের পতনের পর চন্দ্রদ্বীপ রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়। বরিশাল বিভাগ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ ও বাগেরহাট জেলা চন্দ্রদীপ রাজ্যের অধীন ছিল। ফরিদপুর মাদারীপুরের প্রথম ঐতিহাসিক নাম ফাতেহবাদ। ১৭৫৭ সালে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের মধ্যদিয়ে এদেশে ইংরেজ শাসনের সূত্রপাত ঘটে। ১৮৫৪ সালে মহকুমা ও থানা সৃষ্টি হলে মাদারীপুরনাম প্রশাসনিক স্বীকৃতি লাভ করে। ১৯৪৭ সালে বাংলা বিভক্ত হয়ে, পূর্ববাংলা পাকিস্তানের একটি প্রদেশে পরিণত হয়। মাদারীপুর ১৮৫৪ সালে মহকুমা হিসেবে ঘোষিত হওয়ার দীর্ঘদিন পর ১ মার্চ ১৯৮৪ সালে জেলা হিসেবে স্বীকৃতি পায়।

নামকরণ

পঞ্চদশ শতাব্দীর সুফি সাধক কুতুব--জাহান হযরত বদিউদ্দীন আহমেদ জিন্দা শাহ মাদার (রহ.) এর নাম অনুসারে মাদারীপুর জেলার নামকরণ করা হয়। শাহ মাদার (রহ.) ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে সিরিয়া হতে সুলতান ফিরোজ শাহ তুষলকের শাসনকালে (১৩৫১-১৩৮৮ সাল) ভারতে পরববর্তীতে বঙ্গের নানা স্থানে ভ্রমন করেন। চতুর্দশ শতাব্দীর কোনো এক সময়ে তৎকালীন চন্দ্রদ্বীপের উত্তর সীমান্তে গভীর অরন্যের যে স্থানটিতে তিনি ক্ষণিকের অতিথি হয়ে সহযাত্রীদের নিয়ে যাত্রা বিরতি বা বিশ্রাম গ্রহণ করেন সে স্থানটিতে তার নামানুসারে হযরত শাহ মাদার (রহ:) েএর দরগাহ শরীফ নামকরণ করে স্মৃতি স্তম্ভ নির্মীত হয়। সসপ্তদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে বিক্রমপুরের জমিদার ভূমিহীন প্রজাদের পুনর্বাসের লক্ষ্যে চন্দ্রদ্বীপের স্মৃতিবিজড়িত ঐ স্থানটিকে কেন্দ্র করে সরকার মাদারণ অঞ্চল নামে আখ্যায়িত করে ফসলি জমি ও আবাসন গড়ে তোলেন। যা পরবর্তীতে নগরায়নে রুপ নিতে তাকে এবং নাম হয় মাদারণ গ্রাম-ইউনিয়ন। এ মাদারণথেকেই মাদারীপুর নামের উৎপত্তি।

 

মুক্তিযুদ্ধে মাদারীপুর

 

সেক্টর: ২ নং।

হানাদার মুক্ত দিবস:

২৫ নভেম্বর: শিবচর

৮ ডিসেম্বর: কালকিনি, রাজৈর ও ডাসার।

১০ ডিসেম্বর: মাদারীপুর সদর।

সাধারনত তথ্যাবলি

প্রতিষ্ঠা: ১ মার্চ ১৯৮৪ সাল।

সীমানা: উত্তরের ফরিদপুর ও মুন্সিগঞ্জ, পূর্বে শরীয়তপুর, পশ্চিমে ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ এবং দক্ষিণে গোপালগঞ্জ ও বরিশাল জেলা।

আয়তন: ১১২৫.৬৯ বর্গ কিলোমিটার।
জনসংখ্যা: ১২৯৩০২৭ জন।

জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার: .৯২%

ঘনত্ব: ১১৪৯ জন (প্রতি বর্গ কিলোমিটার)

সাক্ষরতা: ৭৪.৯৩% (৭ বছর ও তদূর্ধ্ব)

প্রশাসনিক কাঠামো

উপজেলা: ৫ টি - মাদারীপুর সদর, শিবচর, কালকিনি, রাজৈর ও ডাসার।

থানা: ৫টি।

পৌরসভা: ৪টি- মাদারীপুর সদর, শিবচর, কালকিনি ও রাজৈর।

ইউনিয়ন: ৫৯টি।

জাতীয় সংসদে আসন: ৩টি।

প্রধান নদনদী:

আড়িয়াল খাঁ, কুমার, লোয়ার কুমার, কাঁটা কুমার, কৃর্ত্তীনাশা, পদ্মা, বিল পদ্মা, ময়নাকাটা, টরকী।

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব:

হাজী শরীয়তুল্লাহ, পীর মহসীনউদ্দীন দুদু মিয়া, কংগ্রেস সভাপতি অম্বিকাচরণ মজুমদার, কবি ও সাহিত্যিক আজিজুর রহমান আজিজ, চীফ হুইফ নূর--আলম চৌধুরী, সাবেক নৌপ্রধান মোহাম্মদ নিজামউদ্দিন আহমেদ, ১৯তম প্রধান বিচারপতি এ.বি.এম. খাইরুল হক, নকুল কুমার বিশ্বাস,  গলফার সিদ্দিকুর রহমান, ভারোত্তলক মারিয়া আক্তার, ফনী ভূষণ মজুমদার, ঔপন্যাসিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, সাবেক সংসদ ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী।


উল্লেখযোগ্য স্থাপনা ও দর্শনীয় স্থান

সদর: আউলিয়াপুর নীলকুঠি, আলগী কাজী বাড়ী মসজিদ, পর্বতের বাগান, ঝাউদি গিরি, শকুনী দিঘি।

কালকিনি: সেনাপতির দিঘি, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়ি।

শিবচর: পদ্মা বহুমুখী সেতু, হাজী শরীয়তুল্লাহর মাজার, ভাস্কর্য প্রবাহমান ৭১

রাজৈর: হযরত শাহ মাদারের দরগাহ, অন্নপূর্ণা মন্দির।

মাল্টার সূবর্ণ ভূমি পিরোজপুর

সঞ্চয়িতা: ইকরা
সহযোগিতায়: মিম ইসলাম।
সূত্র: প্রফেসর’স কারেন্ট অ্যাফেয়ার

সারকথা

মাদারীপুর সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে এখানে কমেন্ট করুন। আমরা তথ্য সংশোযন করে দিব। কোন প্রকার ভুল থাকলেও জানাবেন। ধন্যবাদ

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post