মাল্টার সূবর্ণ ভূমি পিরোজপুর: জেলা পরিচিতি (বিভিন্ন ব্যক্তিত্ব, দর্শনীয় স্থান ইত্যাদি)।

বিসিএস, ব্যাংকসহ অন্যান্য চাকুরির পরিক্ষায় মৌখিক পরিক্ষায় জেলা সম্পর্কে প্রশ্ন করে থাকে। আজকের এই আর্টিকেলে পিরোজপুর জেলার বিস্তারিত জানব।

মাল্টার সূবর্ণ ভূমি  পিরোজপুর জেলা পরিচিতি (বিভিন্ন ব্যক্তিত্ব, দর্শনীয় স্থান ইত্যাদি)।


পিরোজপুর আয়তনে দেশের ৫০তম জেলা। রবিশাল বিভাগের মধ্যে ৫ম। জনসংখ্যার দিক থেকে দেশের মধ্যে  ৫৩ তম। বরিশাল বিভাগে ৪র্থ। সাক্ষরতার হারে দেশের শীর্ষ জেলা পিরোজপুর এবং শীর্ষ উপজেলা নেছারাবাদ।


পিরোজপুর জেলার পটভূমি।


২৪ এপ্রিল ১৮৫৬ সালে বাকেরগঞ্জ তদনীন্তন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এইচ.এ.আর আলেকজোন্ডার পিরোজপুরে মহকুমা স্থাপনের প্রস্তাব দেন। ২৮ অক্টোবর ১৮৫৯ পিরোজপুর মহকুমা স্থাপিত হয়। ঐ সময় বর্তমান বাগেরহাট জেলা (মোড়লগঞ্জ, কচুয়া) পিরোজপুর মহকুমায় অন্তর্গত ছিল। ১৮৬৩ সালে বাগেরহাট একটি মহকুমা হিসেবে যশোর জেলার অন্তর্ভুক্ত হয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় এই জেলা থেকে কাঠালিয়া (ঝালকাঠি), বামনা (বরগুনা), পাথরঘাটা ( বরগুনা), বানীরাপাড়া (বরিশাল) উপজেলা এলাকাগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ১৮৬৫ সালে পিরোজপুর মিনিসিপ্যালিটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮৮৫ সালে  পিরোজপুর পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। ১ মার্চ ১৯৮৪ সালে পিরোজপুর জেলায় রুপান্তরিত হয়।


পিরোজপুর জেলার নামকরণ


বাংলার সুবেদার শা্হ সুজা আওরঙ্গজেবের সেনাপতি মীর জুমলার নিকট পরাজিত হয়ে বাংলার দক্ষিণ অঞ্চলে আসেন এবং আত্মগোপনের এক পর্যায়ে নলছিটি উপজেলার সুগন্ধা নদীর পারে একটি কেল্লা তৈরি করে কিছুকাল অবস্থান করেন। মীর জুমলার বাহিনীা এখানেও হানা দেয় এবং শা্হ সুজা তার দুই কন্যাসহ আরাকানে পালিয়ে যান। পালিয়ে যাওয়ার সময় তার স্ত্রী এক শিশু পুত্রসহ থেকে যায়। পরবর্তীতে তারা অবস্থান পরিবর্তন করে ধীরে ধীরে পশ্চিমে চলে এসে বর্তমান পিরোজপুরের পার্শ্ববর্তী দামোদর নদীর মুখে আস্তানা তৈরি করেন। এ শিশুর নাম ছিল ফিরোজ এবং তার নামানুসারে নাম হয় ফিরোজপুর। কালের আবর্তে ভাষার পরেবর্তনে নাম হয় পিরোজপুর।


মুক্তিযুদ্ধে পিরোজপুর


সেক্টর: ৯ নং।

৭ ডিসেম্বর: কাউখালি

৮ ডিসেম্বর: ইন্দুরকানী ও পিরোজপুর সদর।

১২ ডিসেম্বর: নাজিরপুর।

১৩ ডিসেম্বর: ভান্ডারিয়া

১৮ ডিসেম্বর: মঠবাড়িয়া ও স্বরুপকাঠি।


পিরোজপুর জেলার সাধারণ তথ্যাবলি

জেলা প্রতিষ্ঠা: ১ মার্চ ১৯৮৪।
সীমানা: উত্তরে গোপালগঞ্জ ও বরিশাল, দক্ষিণে বরগুণা, পূর্বে ঝালকাঠি এবং পশ্চিমে বাগেরহাট জেলা।
আয়তন: ১২৭৭.৮০ বর্গ কিলোমিটার। [সূত্র: বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বুরো]
জনসংখ্যা: ১১,৯৮,১৯৫ জন। 
জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার: ০.৬৫%।
সাক্ষরতা: ৮৫.৫৩%।
জনসংখ্যার ঘনত্ব: ৯৩৮ জন (প্রতি বর্গ কিলোমিটারে)।

পিরোজপুর জেলার প্রশাসনিক কাঠামো

উপজেলা: ৭ টি ( পিরোজপুর সদর, নাজিরপুর, কাউখালি, ভান্ডারিয়া, মঠবাড়ীয়া, নেছারাাদ ও ইন্দুরকানী।
থানা: ৭ টি।
পৌরসভা: ৪টি (পিরোজপুর, মঠবাড়িয়া, স্বরুপকাঠি ও ভান্ডারিয়া।
ইউনিয়ন: ৫৪ টি।
জাতীয় সংসদের আসন: ৩টি।

পিরোজপুরের উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব


আবুল কাশেম হাওলাদার, বীর বিক্রম।
আলি আকবর আকন, বীর প্রতিক।
এ এস এম এ খালেক, বীর প্রতিক।
কবি ও সাহিত্যিক আহসান হাবীব।
মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক ও ভাষা সৈনিক মহিউদ্দিন আহমেদ।
ইসলামি বক্তা ও প্রাক্তন সংসদ সদস্য দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী। 
শহীদ নূর হোসেন।
সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া।
সাবেক মন্ত্রী ও রাজনীতিবিদ বেগম মতিয়া চৌধুরী।
৯নং সেক্টরের সাব-সেক্টর কমান্ডার মেজর জিয়াউদ্দিন আহমদ।
রাজনীতিবিদ ও তত্ত্ববধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন।
সাবেক মন্ত্রী ও রাজনীতিবিদ আনোয়ার হোসেন মঞ্জু।
ক্রিকেটার শাহরিয়ার নাফীস।
যাদুশিল্পী জুয়েল আইচ।

উল্লেখযোগ্য যা কিছুর অবস্থান


সদর: বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ৮ম বাংলাদেশ চীন-মৈত্রি সেতু।
ইন্দুরকানী: পাড়ের হাট জমিদার বাড়ি ও শহীদ শেখ ফজলুল হক মনি সেতু।
নেছারাবাদ: ছারছিনা মাদ্রাসা ও দরবার শরীফ

মমিন মসজিদ


পিরোজপুর মঠবাড়িয়া উপজেলার ২ নং ধানিসাফা ইউনিয়নে বুড়িচর গ্রামে শতবর্ষী মমিন মসজিদ অবস্থিত। ২২ জুন ১৯১৩ এ অপরুপ কারুকার্যমন্ডিত মসজিদটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ১৭ এপ্রিল ২০০৩ মসজিদটি সংরক্ষণের জন্য সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ‘সংরক্ষিত প্রত্ন সম্পদ’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করে। লোহা কাঠ ও সেগুন কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয় মসজিদটি।

সঞ্চয়িতা: ইকরা
সহযোগিতায়: মিম ইসলাম।
সূত্র: প্রফেসর’স কারেন্ট অ্যাফেয়ার

সারকথা
পিরোজপুর সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে এখানে কমেন্ট করুন। আমরা তথ্য সংশোযন করে দিব। কোন প্রকার ভুল থাকলেও জানাবেন। ধন্যবাদ

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post