হাজী শরীয়তুল্লার আবাসভূমি শরীয়তপুর (জেলা পরিচিতি, বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ ও স্থান)

 

 

 

সোনালি সেতুর শ্যামল ভূমি: শরীয়তপুর।

শরীয়তপুর জেলায় পর্যটন সম্ভাবনাকে কেন্দ্র করে জেলা ব্রান্ডিং এর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আত্ম-মর্যাদার প্রতিক পদ্মা সেতুকে এখানে সেনালি সেতুহিসেবে আখ্যায়িত করা হয় এবং শরীয়তপুর জেলা প্রকৃত পক্ষে কৃষি সমৃদ্ধ জেলা হওয়ায় শ্যামল ভূমিশব্দ দুটি ব্যবহার করা হয়েছে।

 

আয়তনে শরীয়তপুর জেলা দেশের ৫৩তম জেলা। ঢাকা বিভাগের মধ্যে ৮ম। জনসংখ্যায় দেশের ৫০তম জেলা এবং ঢাকা বিভাগে ১১তম। সাক্ষরতায় দেশের ৩১তম জেলা।

 

শরীয়তপুর জেলার পটভূমি

ইতিহাস সমৃদ্ধ বিক্রমপুরের দক্ষিণাঞ্চল এবং প্রাচীন বরিশালের ইদিলপুর পরগণার কিছু অংশ নিয়ে বর্তমানে শরীয়তপুর জেলা গঠিত। পদ্মার পললে গড়া, মেঘনার মায়ায় ঘেরা, কীর্তিনাশা, পালং, আড়িয়াল খাঁ, জয়ন্তী ইত্যাদি নদীর জলে জড়ানো ঢাকা বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল বর্তমান শরীয়তপুর জেলার রয়েছে প্রাচীন ও সমৃদ্ধ ইতিহাস। ইতিহাস সমৃদ্ধ বিক্রমপুরের দক্ষিণাঞ্চল এবং প্রাচীন বরিশালের ইদিলপুর পরগণার কিছু অংশ নিয়ে বর্তমান শরীয়তপুর জেলা গঠিত। শরীয়তপুর জেলা পূর্বে বৃহত্তর বিক্রমপুর এর অংশ ছিল। ১৮৬৯ সালে প্রশাসনের সুবিধার্থে এ অঞ্চলকে বাকেরগঞ্জ জেলার অংশ করা হয়। কিন্তু এ অঞ্চলের জনগণের আন্দোলনের অংশ হিসেবে গ্রহণ করা হয়। স্বাধীনতার পর ১৯৭৬ সালে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় মাদারীপুরের পূর্বাঞ্চল নিয়ে একটি নতুন মহকুমা গঠিত হবে। ১০ আগস্ট ১৯৭৭ সালে রেডিওতে সরকার কর্তৃক মহকুমা গঠনের ঘোষনা দেওয়া হয়। ৭ মার্চ ১৯৮৩ সালে জেলা গঠনের ঘোষনা হয়। ১ মার্চ ১৯৮৪ সালে শরীয়তপুর জেলা হিসেবে স্বীকৃতি পায়।

 

শরীয়তপুর জেলার নামকরণ

বিশিষ্ট সমাজ সংস্কারক ও ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের নেতা হাজী শরীয়তুল্লাহর নামানুসারে শরীয়তপুর নামকরণ করা হয়।

 

মুক্তিযুদ্ধে শরীয়তপুর জেলা:

সেক্টর: ২ নং

১৪ আগস্ট: জাজিরা।

৫ সেপ্টেম্বর: নড়িয়া।

১০ অক্টোবর: ভেদরগঞ্জ।

১০ নভেম্বর: ডামুড্যা।

১৪ নভেম্বর: গোসাইরহাট।

১০ ডিসেম্বর: শরীয়তপুর সদর

 

সাধারন তথ্যাবলি

প্রতিষ্ঠা: ১ মার্চ ১৯৮৪।

সীমানা: উত্তরে পদ্মা নদী ও মুন্সিগঞ্জ, দক্ষিণে বরিশাল, পূর্বে মেঘনা নদী ও চাঁদপুর এবং পশ্চিমে মাদারীপুর জেলা।

আয়তন: ১১৭৪.০৫ বর্গ কিলোমিটার।

জনসংখ্যা: ১২৯৪৫৬২ জন।

জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার: .০১%

সাক্ষরতা: ৭২.৯০% (৭ বছর ও তদূর্ধ্ব)

ঘনত্ব: ১১০৩ জন (প্রতি বর্গ কিলো)

 

প্রশাসনিক কাঠামো

 

উপজেলা: ৬টি - শরীয়তপুর সদর, জাজিরা, গোসাইরহাট, ডামুড্যা, নড়িয়া ও ভেদরগঞ্জ।

থানা: ৮টি।

পৌরসভা: ৬টি - শরীয়তপুর সদর (পালং), জাজিরা, নড়িয়া, ভেদরগঞ্জ, ডামুড্যা ও গোসাইরহাট।

ইউনিয়ন: ৬৫ টি।

জাতীয় সংসদের আসন: ৩টি।

 

 

প্রধান নদনদী

পদ্মা, মেঘনা, দামুদিয়া, আড়িয়াল খাঁ, কীর্তিনাশা, বিণোদপুর, পালং ও জয়ন্তী নদী।

 

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব

মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আব্দুর রাজ্জাক, ঔপন্যাসিক আবু ইসহাক, সাবেক ডেপুটি স্পীকার কর্নেল (অব:) শওকত আলী, ভাষা সৈনিক ডাক্তার গোলাম মাওলা, স্বাধীনতা সংগ্রামী পুলিন বিহারী দাস, গীতিকার অতুল প্রসাদ সেন, সাবেক উপদেষ্টা এম আজিজুল হক, সাবেক আ ইজিপি এ কে এম শহীদুল হক, ভাস্কর্য শিল্পী আব্দুর রাজ্জাক ও বৈজ্ঞানিক গোপাল চন্দ্র ভট্টাচার্য।

 

উল্লেখযোগ্য স্থাপনা ও দর্শনীয় স্থান

 

সদর: বুড়ির হাট মসজিদ, বাংলাদেশ-চীন মৈত্রি সেতু-, ধানুকার মনসা বাড়িরুদ্রকর মঠ।

নড়িয়া: মর্ডান ফ্যান্টাসি কিংডম, হযরত মজিদ শাহ (রহ.) এর মাজার, সুরেশ্বর দরবার শরীফ, মোঘল রামসাধুর আশ্রম, সেনাপতি রাজা মানসিংহের দুর্গ (ফতেহজংপুর দুর্গ)

ভেদরগঞ্জ: মহিষারের দীঘি জেড এইচ সিকদার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বাহাদুল খলিলুর রহমান সিকদারের বাসস্থান।

জাজিরা: পদ্মা সেতু।

 

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post